বুড়ো রাজনাথ

বিশেষ আগ্রহ ক’রে সেই দিন বুড়ো রাজনাথ—
আমাকেও দ্রুত হয়ে চ’লে যেতে দেখে
আমার কাঁধের ‘পরে হাত রেখে— থামায়ে— দাঁড়াল
অথবা রাখে নি হাত— বাতাসের শব্দের মতন
শান্ত এক ইশারায় ডেকেছিল— পৃথিবীর সব-শেষ বেতারের মতো
তাহার আহ্বান আমি অনুভব ক’রে তার প্রাঙ্গণের বীট’এ
দাঁড়ালাম— মনে হল ঘরের ভিতরে
ফসল এসেছে কিছু— (অথবা কিছুই নেই)— সে-সবের নির্জন চেহারা
না দেখেও অনুভব করা যায়— কোথাও রুধির
নেই কিছু— মানুষের হস্তপরিমিত কালো মেঘ
কোথাও আকাশে নেই— কিংবা এই কৃষকের মনের ভিতরে
এ-সময়ে। প্রাঙ্গণে অনেক ঘাস— ক্বচিৎ কোথাও
অতীব নিশ্চুপ ন্যূব্জ পৃথিবীর আনকোরা কঙ্কালের মতো
মাঝে-মাঝে সাদা মাটি— অনেক টেবিলে ঘুরে নগরীর
যখন সকলই তার আশাতীত সফল হয়েছে
এই সব স্থানে এসে— অবশেষে— জীবনের বাকি ক’টা দিন
ঘাসের উপরে শুয়ে— কর গুণে— শান্তি পেতে পারে
রিবেনট্রপ। রিবেনট্রপও।
এই কথা মনে হল এইখানে দাঁড়ানো বুড়োর
চোখের ভিতরে কিছু চেয়ে থেকে কয়েক মিনিট
কেননা সে-চোখ ঢের সমীচীন অর্থবত্তাময়
সর্বদাই স্পর্শাতুর হৃদয়কে স্পর্শ ক’রে যায়
অবশেষে এক দিন হেমন্তের নিষ্প্রভ আলোয়
যখন বিনষ্ট ধান— মৃত পাখি— লুপ্ত নদী ছাড়া
অধিক প্রতিজ্ঞা কিছু নেই আর কোনও পৃথিবীতে
ক্যাম্প নেই— কাজ নেই— ওরা কেউ নেই ব’লে যে-কোনও স্টেশন
রেডিও’র ব্যবহার অর্থহীন— এ-পৃথিবী বহু দিন হয়
ষড়যন্ত্রহীন হয়ে কুয়াশায় দাঁড়ায়ে রয়েছে।

Comments

সর্বাধিক পঠিত কবিতা

যত দূর চোখ যায়

তবুও সে আসবে না আর

এইখানে প্যাকাটির মতো

আকাশের চাঁদ

যাত্রী

পটভূমি

সূর্য রাত্রি নক্ষত্র

রবীন্দ্রনাথ

পটভূমির ভিতরে গিয়ে

নারীসবিতা