রাত্রি

অইখানে কিছু আগে— বিরাট প্রাসাদে— এক কোণে
জ্ব’লে যেতেছিল ধীরে এক্‌সটেন্‌শন্‌ লেকচারের আলো।
এখন দেয়ালে রাত— তেমন ততটা কিছু নয়;
পথে পথে গ্যাসলাইট র’য়েছে ঝাঁঝালো
এখনো সূর্যের তেজ উপসংহারের মত জেগে।
এখনো টঙ্গে চ’ড়ে উপরের শেলফের থেকে
বই কি বিবর্ণ কীট— ধুলো— মাকড়সা বার হবে
দোকানের সেলস্‌ম্যান চুপে ভেবে দেখে।
এখনো নামেনি সেই নির্জন রিকশাগুলো— নিয়ন্তার মত,
সমূহ ভীড়ের চাপে র’য়েছে হারায়ে।
অজস্র গলির পথে একটি মানুষ
যুগপৎ র’য়েছে দাঁড়ায়ে;
পৃথিবীর সকলের হৃদয়ের প্রতীকের মত;
এই রাত থেকে আরো অধিক গভীরতর রাতে
কলুটোলা— পাথুরিয়াঘাটা— মির্জাপুরে
এসপ্লানেডের ফুটপাতে
মালাঙ্গা লেনের পথে— ক্রিক রো’তে
ককবার্ন লেনের ভিতরে
এক জোড়া শিঙ যদি দেখা দেয় লোকটার টাকে—
পরচুলা চুরি ক’রে নিয়ে গেছে তবে যাদুকর।
এখানে রাত্রির পারে তোমার নিকট থেকে আমি
চ’লে গেলে
চ’লে যাব;—
পৃথিবীর কাছ থেকে নয়;
রাত্রি এই সারারাত জীবনের সকল বিষয়
হয়ে আছে।
তিত্তিরাজ গাছ থেকে শিশির নীরবে
ঝরে যায়;
ডানার আঘাতে যায় কাকদম্পতীর;
হলুদ খড়ের পরে ঝ’রে পড়ে আবার শিশির
হাওয়ার গুঁড়ির মত।
কোথায় হারায়ে তুমি গিয়েছ কখন।
মাথার উপরে সব নক্ষত্রেরা ছুরির মত বিচক্ষণ
সময়ের সূতো কেটে— অবিরাম সময়ের সূতো কেটে ফেলে
আমার চোখের পরে রাত্রির প্রাঞ্জলতা ঢেলে;
কোথাও বাতাবী উষ্ণ হয়ে ওঠে— ঘুরে যায় মাকরসাপোকার লাটিম,
ভাঁড় হাসে,— সম্রাজ্ঞীর অবয়ব হয়ে থাকে হিম;
নদীরা শিশুর মত— শিশুরা নদীর মত দূর;
স্বর্গের কিনারে গিয়ে ভিড় আর ভিখিরির নীল আলো করে টিমটিম।
শিশুর কপাল থেকে বেজে ওঠে নরকের বিচিত্র ডিন্ডিম।

Comments

সর্বাধিক পঠিত কবিতা

যত দূর চোখ যায়

তবুও সে আসবে না আর

এইখানে প্যাকাটির মতো

আকাশের চাঁদ

যাত্রী

পটভূমি

সূর্য রাত্রি নক্ষত্র

রবীন্দ্রনাথ

পটভূমির ভিতরে গিয়ে

নারীসবিতা