বুড়ো হতে চলিলাম
বুড়ো হতে চলিলাম— খানিক স্বগত উক্তি চাই
অন্ধকারে জেগে উঠি কেমন-যে নির্বান্ধব ঘরে
মনে হয়, চীনেদের আরশোলা-চাটনির দোকানের ভিতরে ফাঁপরে
কয়েকটা বাঁকা চোখ আমারেও ধ’রে-ধ’রে সিদ্ধ যেন করে
চল্লিশ বছর আগে বাবা গেছে— মা গিয়েছে— তবু যেন
পর্বতের মতো উঁচু নিজেকেই মনে হয়েছিল।
তার পর রাম গেল— শ্যাম গেল— যদু গেল— শিব গেল—
কবেকার বালিকারা চোখের পলকে সব বুড়ো হয়ে— হুড়-হুড় ক’রে—
বৈতরণী-স্টেশনের সিজন-টিকিট পেয়ে গেল
এক-একটা স্বর আমি এই শুনি— এই শুনি—
কানে যেন আমার এ-জীবনের সমস্ত জলের স্বাদে ডাকে
তবু কোনও পাথরের গাভীকর্ণ— দূর— দূর— দিগন্তের (আমার চেয়েও যেন ঢের)
আমার চেয়েও ঢের তৃপ্তি পায় সেই সব ধ্বনির তোয়াজে
কে-বা জানে পাথরের সে-গাবিন-গাভীটাও আছ কী-না
স্যার নৃপেনের মতো কেউ ঢুঁড়েছে কি— করেছে সপিনা
আছে— আছে— মনে হয়— দু’-একটা ভোরবেলা বাতাসের সুরে কান রেখে
তবু জানি ফাটকা— সিনেমা— ট্রাম— চুধুরিয়া— লেমনেড— ঘোড়দৌড়— কংগ্রেস— মুন্সেফির থেকে
(কোনওই ফতোয়া আজও পাওয়া যায় নাই)?
আমার এ-প্রণিধান সটকায়ে চলে যেন এক চোখে ঘোড়ার মতন
সংকীর্তন শেষ হলে কিছুটা বাতাসা আর জীবিত নারীর সাদা হাত—
তবুও দেখিতে চায় বড়ো-বড়ো বেড়ালের মন।
সংযুক্ত চেতনার কোরাস: রায় সাহেবের সাথে রাত-ভোর কত সংবৎসর ধ’রে খেলা হল পাশা
ধুন্ধুমার রাতে ঘুম ভেঙে গেলে মনে হয় পুরোনো হাঁসটা কেন ছেড়ে যায় বাসা
অনন্ত নিশীথ যদি বিচরণ করো তুমি নিরুষ্ট্র নির্লিপ্ত ধূ-ধূ গোবি-মরুভূমি
তোমার পায়ের শব্দ ছাড়া আর কিছু টের পাবে না ক’ তুমি
মৃদঙ্গে তবুও শেষ চাঁট মেরে থেমে যায় সব-চেয়ে দীর্ঘ সংকীর্তন
কিছুটা বাতাসা আর জীবিত নারীর সাদা হাত—
তবুও দেখিতে চায় বড়ো-বড়ো বেড়ালের মন।
Comments
Post a Comment