বিচ্ছিন্ন ভিখিরি
এই বার যেই দিকে চোখ যায়— চ’লে যাব বটে
ব’লে গেল কোনও এক বিচ্ছিন্ন ভিখিরি।
কাঠের গাড়িটা তার গড়গড় করে চ’লে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে
যে তাকে নিতেছে টেনে সে-ও তেলচিটে।
গাড়ি তার শহরের দু’-চারটা বিটে
হাওয়া খেয়ে চ’লে যাবে— যেইখানে বুধ সোম শনি
হাত পা নাকের ডগা নুলো ক’রে টাকা আর টাকা আর টাকা— তার কুষ্ঠকলোনি
কা’কে দিতে হয় সব টাকার গরম
জানলাতলায় থেমে ছাঁদন পেরিয়ে এক-দম।
বাম দিকে কোনও এক ছিপছিপে ঘুড়ির পিছনে
চলেছে মিনসে গাধা সাদা দাঁত বের ক’রে হেসে
ডান দিকে কোনও এক পেরিনের কিচেনের থেকে
চিংড়ি মাছের গন্ধ উঠেছিল পেকে
জানালায় বোকা এক বাবুর্চিকে দেখে
নুলো হাত তুলে নিয়ে সেলাম জানাতে
(মানুষের চেয়ে মিহি)— মিহি হাসি বার হল বাঁ দিকের গাধাটার দাঁতে।
গড়গড় ক’রে তার তিনটি চাকার গাড়ি মাজা ভেঙে চলে
চার-দিকে পথঘাট পয়দা’রা— ডাস্টবিন হয়ে আছে সাফ
হুটহাট ধর্মঘট ঘটেছিল (অবশেষে) গুনতির হিসেবের মাল নিয়ে গেছে তুলে
শহরের বাবামহাশয়গণ গণনার ভুলে বিড়ালের মতো কিছু ফুলে
দৈনিক ও আজ সারা কলকাতা শহরে হেসে গেছে টেরিকাটা চুলে।
রাজারহাট বা গোবরা— দু’কূল ফুরুলে ডাস্টবিনে
উড়ে গিয়েছে সব ট্যাংরা মাছের মুড়ো, মরা বিড়ালের ঠ্যাং— নেই।
অথবা আঙুল নেই ব’লে ভয়ে স’রে যায়— কুষ্ঠিটা হাত বাড়াতেই।
ততই বেহাত হয়ে মেয়েদের— ছুঁড়িদের— টাকার গরম;
তবুও ভড়কে দিত গড়িয়ে হাতড়ে পেলে এদের পেখম
ম’রে এক ভূত হয়ে জানলাতলায় এক-দম।
হয়তো-বা রাজা হবে— তা ছাড়া কী হবে— রাজা মনে ক’রে
ঐ হুপো ছুঁড়িটাকে পেয়ে যেত যদি
এমন ছেনাল তবু শহরের পথে-ঘাটে ঢের লটকায়
এদের সে যত বেশি সেলাম জানায়
যতটা পেটের দায়ে প্রায় ততটাই সূচনার লাঙলের দায়
একটি ঘোড়ার ডিম পেটে নিয়ে সাতবুড়িদের মতো এক বুড়ি
কুষ্ঠরুগিনি এক ন্যাকড়ার জুতো পায়ে যেতেছিল দেখে
সাত-পাঁচ না ভেবেই তাহাকে সে সেলাম দিতেই
নিদান জানাতে এল হাসিমুখে সে-ও সহজেই
প্রতি রোমে ভিজে যেতে দু’জনেই— ন্যাতায়ে যেতেই।
এত বেশি ভিজে গেছে— সেই জলে খেলা করে পাঙ্গাশ মাছ
নুলো হাতে কোথাও আঙুল নেই— তবুও তা ফুলে কলা-গাছ।
এই বার যেই দিকে চোখ যায়— চ’লে যাব বটে
ব’লে গেল কোনও এক বিচ্ছিন্ন ভিখিরি।
কাঠের গাড়িটা তার গড়গড় করে চ’লে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে
যে তাকে নিতেছে টেনে সে-ও তেলচিটে।
গাড়ি তার শহরের দু’-চারটা বিটে
হাওয়া খেয়ে চ’লে যাবে— যেইখানে বুধ সোম শনি
হাত পা নাকের ডগা নুলো ক’রে টাকা আর টাকা আর টাকা— তার কুষ্ঠকলোনি
কা’কে দিতে হয় সব টাকার গরম
জানলাতলায় থেমে ছাঁদন পেরিয়ে এক-দম।
Comments
Post a Comment