ধূসর সময়

ধূসর সময় পথ অতিক্রম ক’রে
দেখা যায় সম্মুখের কুয়াশার স্তর
আরও ঘন— আরও গাঢ় অন্ধকার
তখন পিছনে ডাক পড়িল আমার
জলপাইকুঞ্জবন— কবলিত— কোনও এক সমুদ্রের পারে
এক বিশ্রুত গুহায়
যেইখানে কেউ আর চায় না ক’
পৃথিবীতে মানুষ যা পায়
এই প্রান্ত শৃগাল চেনে নি কোনও দিন
কিংবা শৃগালের ধাতু— সিংহ-অবতার
(এই পথে গিয়ে আজ কী হবে আমার)

মাকু-হাতে দাঁড়ায়ে রয়েছে এক মনস্বিনী নারী
পিছে তার বিচূর্ণ আয়না থেকে প্রস্তাবিত— ধীর—
একই পূর্ণ ভূমিকার উক্তি সারি-সারি
কড়ির মতন সাদা কঠিন জ্যোৎস্নায়
দাঁড়ায়ে রয়েছে সাধু— চর্মচক্ষুহীন— ইতস্তত—
অবাধ আয়ুর পথে বারংবার দাঁড়াবার মতো।
পুরানো মৃতেরা তবে এই পথে— কিংবা পৃথিবীর ভ্রূণ?
সমুদ্রকে মনে হয় হাতের ভিতরে ধৃত জল যেন এই মহিলার
আমার হাতের তালু পেয়ে গেছে শেষ উঁচু পামিরের মতন আকার—
সেই প্রসারের ‘পরে এক ফোঁটা শিশিরের কণাও লেগুন।

এখানে রয়েছে সব নতুন মৃতেরা?
অত্যধিক অহঙ্কারে গিয়েছে অদৃশ্য হয়ে যেই সব যুবক শূনরী
কিংবা দেবীপীঠ আজও প্রতি দণ্ড-অনুপলে যাহাদের নিয়ে যায় ধরি
নেত্ররোগে তারা আধাে-অন্ধকার ব’লে
যত দিন সূর্য ঐ পৃথিবীতে গিয়েছিল জ্ব’লে
আমাদের মনের ভিতরে তারা সমুজ্জ্বল ধবল ক্যারেরা
মর্মরের মতো ছিল জীবনের চাহিদাকে ভালোবেসে— তত দিন।
নীল আকাশের নিচে পৃথিবীর অদ্ভুত আলোকে
তাহাদের অশুদ্ধ অন্তিম তবু—
কোনও স্থির প্রত্যর্পিত কবিতার শ্লোকে
কেন গা’বে?—
অথবা গাহিতে গেলে আস্তীর্ণ দুরন্ত হাস্যে
সেই সব মৃতদের ভিড়
শিশুকেও রাতারাতি পাণ্ডুর স্থবির
ক’রে দেয়।

Comments

সর্বাধিক পঠিত কবিতা

যত দূর চোখ যায়

তবুও সে আসবে না আর

এইখানে প্যাকাটির মতো

আকাশের চাঁদ

যাত্রী

পটভূমি

সূর্য রাত্রি নক্ষত্র

রবীন্দ্রনাথ

পটভূমির ভিতরে গিয়ে

নারীসবিতা