পরশুরাম

‘পরশুরাম, কোন পথ রুদ্ধ আমি করিব তোমার-‘
আলোর ভিতর থেকে বাণী এল নেমে
সূর্য যেন আলপিনে বিদ্ধ হয়ে সাতটি রঙের জোরে ফেটে
দিকে-দিকে বহু প্রহরীর মতো আছে থেমে

আমি পরশুরাম নই— নই তবু তাহাদের নড়চড় নেই
আমি এক সাধু হাঁস— নোনা পুকুরের
তবে তারা মেয়েলি হাতের স্পর্শ— এই পৃথিবীর
এক দিন মাংস খাবে তবু সেই হাঁসের তেলের

সচ্ছল জেলের মতো আমি— তবে তারা সেচ-বিভাগের
নুনের স্তম্ভের মতো আমি— ফেনশীর্ষ তারা তবে সমুদ্র উদ্দাম
মুষ্ট্যাঘাতে ক্ষণ-কাল স্তম্ভিত যেন তারা জাগুয়ার
বৈতনিক ইস্কুলের অনেক মহার্ঘ কাজে আত্মা থেকে ঘাম

ঝরিতেছে তাহাদের— ঝরিতেছে
‘কস্মৈ দেবায়’ থেকে আজ এই সুশৃঙ্খল অর্থনীতি-তক
সব-চেয়ে সুসঙ্গত সমাধানগুলো তারা আচারের মতো পুরে নিয়ে
হৃদয়কে ক’রে রাখে খররৌদ্রে অমোঘ জারক

থুতু ফেলে— তর্জনী তুলে তারা নির্দেশে বলিতে আছে:
‘আমরা পীবর পীঠ— ব্যবহৃত শকুনের তরে দীর্ঘ পাম
আমরা তিনটি ঘণ্টা রাসভের চোয়ালের মতো জোরে ঢং-ঢং করি
বালখিল্য ঋষিদের টুপি সব তাড়াতাড়ি হতেছে নিলাম’

‘তুমি যদি মানুষের জন্ম নাও পৃথিবীতে
তা হলে দেখিবে মোরা দেয়ালের ঘড়ি
তুমি যদি মৈথুন ভালোবাস— তা হলে দেখিবে মোরা হাড়িকাঠ
গড্ডলিকায় যদি গুপ্ত থাক— তা হলে দেখিবে মোরা ছাগলের দড়ি’

‘তুমি যদি ওলন্দাজ নাবিকের মতো চ’লে যেতে চাও দূর নিরুদ্দেশ জলে
তবে তুমি প্রাগৈতিহাসিক হাড় আমাদের শিশি’র ভিতরে
হয়ে যাবে— বাম পদ বাড়াতেই— কিন্তু যদি কর দাও— সভাসমিতির সুরে
সুর দাও— তবে তুমি বাজারের বড়ো চালাঘরে’

‘লাল ঝুঁটি-অলা এক কুঁকড়ো’র মতো
চারি-দিকে মোসায়েব— কুক্কুটী’র ভিড়
পালোয়ারি পেটগুলো লক-লক করিতেছে ছুরির মতন
তোমারে পেয়েছে ব’লে রৌদ্রনীলিমায় ব’সে কিনিছে জামির’

‘তবু তুমি বেঁচে আছো— দু’ মুহূর্ত?— বৈতনিক স্কুল’এ তবু—
তোমার দক্ষিণে নারী, বামে নারী, ঊর্ধ্বে নারী, অধঃতেও তিলোত্তমা নিজে
যদিও সবার ডানা দড়ি দিয়ে বাঁধা, সব পোলো দিয়ে ঢাকা
আমরা তবুও আজ মন্ত্র খুঁজিতেছি— সব পূরে দেব সাধু করদাতার তাবিজে’

‘তোমাদের ঘুণাক্ষর বহির্গমনের দ্বার মোরা রুদ্ধ করিব না তবু
যদিও পোলোর নিচে— সূচ্যগ্র ভূমিতে তবু মিষ্ট— পলাতক—
হতে হলে হতে পারে: যাহাদের ঢোক গিলে সব-শেষ কথাটুকু
বুঝিবার শক্তি আছে;— আজ আর নয় যারা বয়ঃসন্ধি-দিনের বালক-‘

‘চাল খাও— জল খাও— আঁধারে ঘুমায়ে থাক আঁকাবাঁকা ভৃগুরেখা হয়ে
শুধায়ো না কী হয়েছে সংঘটন?— বামে যেন যক্ষ্মার বিজ্ঞাপন— তবু উরুবশী
শুয়ে আছে— ভালো ক’রে চোখ দু’টো তুলে চেয়ে দেখ তালকানা
মুখ যদি ভালো নাহি লাগে তবে মেপে দেখ পদনখে অন্তত প’ড়ে আছে শশী।’

Comments

সর্বাধিক পঠিত কবিতা

যত দূর চোখ যায়

তবুও সে আসবে না আর

এইখানে প্যাকাটির মতো

আকাশের চাঁদ

যাত্রী

পটভূমি

সূর্য রাত্রি নক্ষত্র

রবীন্দ্রনাথ

পটভূমির ভিতরে গিয়ে

নারীসবিতা