অনেক গভীর রাতে
অনেক গভীর রাতে
ভৌতিক বায়ু
আমার নিস্তব্ধ ঘরে
জিনিতেছে যেন পরমায়ু
সারাদিন মাঠের ফড়িং
চরেছিল রোদের ভিতর
এখন দ্বিজন্ম তার চাকতির
এইখানে আঁধারের ‘পর
অথবা ফড়িং নাকি
কিংবা ইঁদুর
মনে হয় মৃত নবী— মৃত
সাদা অশ্বীর খুর
নতুন কাঠের ‘পরে
শিশিরের চুমোর মতন
কি এক আরূঢ় ঘ্রাণে
করে আকর্ষণ
গেলাসের ভাঙা কাঁচ
ধীরে-ধীরে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়
কোথাও ঘরের কোণে
এখন এ ধ্বনির সময়
যেই সব নাশপাতি— বহু আগে
চ’লে গেছে ভূমধ্যসাগরে
বহ্নিমান রৌদ্র থেকে
ফিরে এল ঘরে
ফণীমনসার বন
গোবী মরুভূমি
তুমিই তো হে হৃদয়
উটের ককৃদ— তৃষ্ণা— তুমি
বিকীর্ণ বানর-নর-হাড়-হাড়
বিনীত করুণ মরীচিকা
তুমি, তুমি হে হৃদয়
সিলিকন, অগ্নিপুত্তলিকা
গলিত লোহার মতো সারাদিন নদী তুমি
জানালায় বরফের খোড়োজমি রাতে
বড়ো-বড়ো পেঁচা আসে কৃষকের মতো যেন
সুমধুর লাঙলের মতন আঘাতে
এই শীতলতা— ব্যাস পায় না ক’ পিরামিড
মার্কোপোলো পায় নাই— অথবা ট্রটস্কি পেরেনডিন
পেলিকান পাখিগুলো মরে যদিও
সঙ্গীন যদি ধরে
কিংবা যদি— মুক্ত হয়ে যায় সোয়াবীন
তবে তারা পেলিকান— সাধু, মৃত্যু, মৈথুন
ক্রমে-ক্রমে সোনালি খড়ের কোনও হৃষ্ট পৃথিবীতে
বিবর্তন পেয়ে যাবে— সকলেই
গাভী আর গিনিপিগ পুষিতে-পুষিতে
হে লেনিন, হয়তো-বা তবু তুমি জেনেছিলে
না জানিলে অস্পষ্টতা অপরাধ কিছু
নয় আর। দু’-একটি অযাচিত মানুষের মাথা থাকে
মাথা থাকে চিরদিন কুয়াশায় নিচু।
যেন কোনও গিলোটিন
কিংবা খড়গাঘাত
তাদের ঘাড়ের ‘পরে রক্তে ভিজে
জাগাক এ পৃথিবীর নতুন প্রভাত
তবুও নিভৃত ঘাড় মরে না ক’
বধির মুদ্রিত চোখ ইস্পাতের মতো যেন নীল
খাদ্যের থালায় খেয়ে ঘাসের ভিতরে দেখে
ভিনফুলে ফুটে আছে অনন্ত নিখিল।
Comments
Post a Comment