প্রথম ফসল ঘরে চ’লে গেছে

প্রথম ফসল ঘরে চ’লে গেছে— খানিকটা ধান খেতে প’ড়ে আছে— কয়েকটা আঁটি
কার্তিকের অপরাহ্ন: বহু দিন পরে আজ এই পথে হাঁটি
এক-আধটা মাছরাঙা উড়ে যায়— পাটকিলে ডানা মেলে— খড় মুখে চিল যায় উড়ে
সুপুরির সারি নীল হয়ে আছে— শালিখ বসেছে এসে সোনালি খেজুরে
আমার পায়ের নিচে কত দিন পরে আজ পাড়াগাঁর ঘাস আর মাটি!

চলো যাই আরও দূরে— যেই দিকে ফিঙ্গেটা উড়ে গেল— ওরই কাছাকাছি
সোনালি রোদের শিষ নিভে যায়— আঁধারে হারায় বুঝি মাছি
চলো যাই— চলো চলো, আমার হৃদয়
প্রেত তুমি— তবে আর প্রেতিনীরে করো কেন ভয়
এইখানে আম-ডালে এক দিন ঝুলেছিল দড়ি এক গাছি।

আর-এক পাড়াগাঁর রূপসির দেহ
আমাদের নয় সে তো কেহ
আষাঢ়ে গিয়েছি কাজে গ্রাম ছেড়ে— আশ্বিনে ফিরিয়া দেখি ঘরে
কেউ নাই ঘরের ভিতরে
বিশালাক্ষী স্বপ্নে এসে ব’লে গেছে: এইখানে পাবে তারে— নাই ক’ সন্দেহ।

চলো— চলো— ঐখানে দাঁড়কাক কলরব করে
ডুমুরের পাতাগুলো ঝরে
ঐখানে ছিল তার শব
জ্যোৎস্না-ধবধব;
ঐ দেখ: কে-না ঐ আমগাছে চড়ে—

হাতে তার এক গাছা দড়ি
কত চুল বুকে পিঠে পড়িতেছে ঝরি
আম-ডালে বেঁধে নিয়ে গলায় দিয়েছে দড়ি বেঁধে
নিমপেঁচা জ্যোৎস্নায় উঠিতেছে কেঁদে
নিম— নিম— নিম— নিম— নিম— নিম করি।

কই— পেঁচা কই
কুয়াশায় উড়ে গেল অই
প্রেতিনীও কুয়াশায়
চেয়ে দেখ, মুছে যায়
জ্যোৎস্না বিলের জলে করে থৈ-থৈ—

Comments

সর্বাধিক পঠিত কবিতা

যত দূর চোখ যায়

তবুও সে আসবে না আর

এইখানে প্যাকাটির মতো

আকাশের চাঁদ

যাত্রী

পটভূমি

সূর্য রাত্রি নক্ষত্র

রবীন্দ্রনাথ

পটভূমির ভিতরে গিয়ে

নারীসবিতা