সর্বদা হৃদয়ে আমি

সর্বদা হৃদয়ে আমি আকর্ষণ অনুভব ক’রে গেছি ভোরে
অথবা রাতের বেলা টেবিলে মোমের ছোট আলো
স্বতই নিভায়ে ফেলে— অই সব দূর পর্বতের
আকাশের— নক্ষত্রের— আমার পায়ের নিচে শনের ভিতরে
কী ক’রে শিশির এসে লেগে আছে— অথবা পাখির
সাটিনের মতো লোম ভিজে গেছে রুপালি বৃষ্টির
গুঁড়ির ভিতরে উড়ে— আশ্বিনের বিকেলবেলায়
এই সব আধেক-সতর্ক সাদা জিনিসের তরে
অথবা কী ক’রে কেউ কোনও এক রূঢ় মনীষীর
বিরাট শবকে নিয়ে চ’লে যায় আরও রূঢ়তর
অন্ধকার— আগুনের দিকে— রাতে— কী ক’রে-বা শরীরের নাড়ি
প্রেমিকের প্রতীতির মুহূর্তকে নষ্ট ক’রে ফেলে
পিঙ্গল রূপোপজীবী সময়ের ইস্পাতের ঘড়ি
পীড়িত নদীর মতো ভেসে চলে মণিবন্ধ ঘিরে
এর— ওর— আমাদের সকলের।— যেন অন্য তৌল
সহসা নির্দেশ দিল (মানুষের) তুলার দণ্ডকে
প্রেম— আশা— প্রতীক্ষার চেয়ে সর্বদাই
বিমূঢ়তা দমে ভারি। আবার কন্যারা এসে সব—
বলিষ্ঠ কন্যারা এসে (একে-একে) জড়ো হয়ে যাবে
(এইখানে— ওইখানে— ব্যূঢ় রাষ্ট্রভাষাভাষীদের
ক্যাম্পের করুণায়— সময়ের দূর— দূরতর নক্ষত্রেরা
তাহাদের প্রতীকের মতো হয়ে যদিও কোথাও
গভীর ঘণ্টার রোলে বেজে উঠে চ’লে যেতেছিল
অন্য কোনও অনুপম অনীহাকে লক্ষ ক’রে নিয়ে
হয়তো অপর কোনও অঙ্ক-পরিপূরণের দিকে)
আবার দক্ষের যজ্ঞ— মহাদেব— মূর্ত ছাগলের
ভয়াবহ মুণ্ড এসে দেখা দেবে— কেননা সময়
দক্ষকন্যাদের রূপ— প্রেম— মিল— সান্ত্বনার বীজ
সৃষ্টি ক’রে ফেলে দিয়ে নিজের দর্পণে
চেয়ে দেখে লেগে আছে অতিরিক্ত অন্য এক চুল
ভ্রান্তির অন্যায় তবু— তা হলে মাটির পথে হল
আবার চালিত হয়ে ডিম
আবিষ্কার ক’রে নেবে— আবার সীতার জন্ম হবে
সোনা’র মৃগের সাথে বিজৃম্ভিত হয়ে
আবার পতঞ্জলি, গণপতি, ব্যাস
ধূসর গাধার পিঠে প্রভাতের সঙ্কুল নদীতে
সমুজ্জ্বল কর্কচের গুঁড়ির মতন
মিশে যাবে। কোথাও সক্রিয় সত্য তবু
কোথাও সক্রিয় সত্য রয়ে গেছে ব’লে
সত্যের প্রতীক দেখো সর্বদাই দেয়ালের ‘পরে
ছায়ার মতন নাচে— হে শঠ নর্তকী
আমার ভোরের সূর্য রুধিরের সংক্রামকতায়
জেগে উঠে চ’লে যায় ক্লান্ত বিকেলের
শিশিরের মতো শব্দে রাজ-রাষ্ট্র-পথে
যেখানে রুধির, ঘড়ি, গম্বুজের বয়ঃক্রম ঢের
হয়ে গেছে— তবুও হৃদয়ে কোনও ক্ষমা নেই কারু
অন্য কোনও অনুরূপ অক্ষমের তরে।

Comments

সর্বাধিক পঠিত কবিতা

যত দূর চোখ যায়

তবুও সে আসবে না আর

এইখানে প্যাকাটির মতো

আকাশের চাঁদ

যাত্রী

পটভূমি

সূর্য রাত্রি নক্ষত্র

রবীন্দ্রনাথ

পটভূমির ভিতরে গিয়ে

নারীসবিতা